logo
খবর

বিচার বিভাগের প্রতি কোনো সরকারই যথার্থ নজর দেয়নি: মুক্ত আলোচনায় বক্তারা

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক২০ নভেম্বর ২০২৪
Copied!
বিচার বিভাগের প্রতি কোনো সরকারই যথার্থ নজর দেয়নি: মুক্ত আলোচনায় বক্তারা
নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৭ বছর শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় আলোচকেরা। ছবি: সংগৃহীত

যদি মানুষ অনুভব করে যে বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, তাহলে রাষ্ট্রে সেই বিচার বিভাগের কোনো আস্থার স্থান থাকে না। বিচার বিভাগের প্রতি কোনো সরকারই কখনো যথার্থ নজর দেয়নি। ফলে বিচার বিভাগ সরকারের সবচাইতে দূর্বলতম বিভাগে পরিণত হয়েছে বলে মস্তব্য করেছেন গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।

‘নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ১৭ বছর’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

খবর বার্তা সংস্থা ইউএনবির।

বুধবার (২০ নভেম্বর) মিনৌরী বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’ এবং মাসিক আইন ও বিচার।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “বিচার বিভাগের আজকের অবস্থা আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। আইনজীবীরা বিচারকদের বিচারিক কার্যক্রমের সহযোগী। কোর্টে বেঞ্চ আর বার একই মুদ্রার দুই পিঠ। এজন্য এই দুই অংশকে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ সাজাতে হবে।”

“বিচারকদের মানসিকভাবে স্বাধীন হতে হবে, তা না হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে পারবে না,” যোগ করেন তিনি।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “জুডিশিয়ারির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো তার এক্সেস। আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের স্বচ্ছতা নির্ধারণে বিচার বিভাগ কাজ করতে পারে, কিন্তু তা অবশ্যই স্বাধীনভাবে। বিচার বিভাগের টাইরানির চেয়ে বাজে বিষয় হতে পারে না। এর কারণে মানুষ যে ভোগান্তিতে পড়ে তা অস্বাভাবিক। যদি মানুষ অনুভব করে যে বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, তাহলে রাষ্ট্রে সেই বিচার বিভাগের কোনো আস্থার স্থান থাকে না।”

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আইন সংস্কার কমিশনের সদস্য মাজদার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার, জেলা জজ ও সংবিধান আলোচক ইকতেদার আহমেদ, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য জিমি আমির, বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট মো. খাদেমুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট শাকিল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমূখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ।

মাজদার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “পৃথক সচিবালয় স্থাপনের দাবি নিয়েই আমাদের সংগ্রাম। সেই দাবি থেকে আদৌ সরে যাইনি এবং এ দাবির প্রতি অটল রয়েছি। বিচার বিভাগ প্রধান বিচারপতির নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। এমন একটি অবকাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে বিচারকদের নিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সকল সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতির নিকট অর্পিত থাকবে।”

তিনি বলেন, “যে সিআরপিসি ব্রিটিশরা ফেলে দিয়েছে, আমরা এখনো তা আঁকড়ে ধরে আছি। বাংলাদেশে কাগজে-কলমে বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও তা আমার আশা পূরণ করতে পারেনি। রায়ের ১২ দফার কোনোটিই পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।”

“আজও বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে প্রশাসন। অথচ আইন বিভাগের কাজে প্রশাসন ইন্টারফেয়ার করতে পারে না। বিগত ৫৩ বছরে কোনো রাজনৈতিক দলও জনস্বার্থে আইন করেনি, তারা নিজেদের রক্ষা ও ক্ষমতার স্বার্থেই আইন করেছে। তারা কোনো কালাকানুন বাতিল করেনি। আমরা আষ্টেপৃষ্ঠে শাসকগোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত,” যোগ করেন তিনি।

ইকতেদার আহমেদ বলেন, “বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ এখন আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে, তা সুপ্রিম কোর্টের অধীনে নিতে হবে। তবে আগে সুপ্রিম কোর্টে তা নিয়ন্ত্রণের মতো অবকাঠামো ও পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। অধিকতর যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা নিম্ন যোগ্যতাসম্পন্ন লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু বর্তমানে উচ্চ আদালতে যারা বিচারক হিসাবে আসীন রয়েছেন তাদের যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।”

জিমি আমির বলেন, “মানুষ সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল বলেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছে। তাই সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। আর এজন্যই বিচার বিভাগকে পুর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দিতে হবে।”

মো. খাদেমুল ইসলাম খাদেমুল বলেন, “বিচার বিভাগ ও বিচারকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত না করতে পারলে মানুষের আস্থা অর্জন সম্ভব নয়।”

সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, “১৬ বছর নয়, ৫৩ বছরের অবিচার ধরে কথা বলতে হবে। বিচার বিভাগের সংকট কখনোই কাম্য নয়। আমরা জুডিশিয়ারি টাইরানি দেখেছি। আদালতে আইনজীবীদের বিচারকদের অন্যায় সহ্য করতে হয়, যা কাম্য নয়। মানুষ ৫৩ বছরের পরে হলেও কথা বলা শুরু করেছে যা আমাদের ধরে রাখতে হবে।”

আরও পড়ুন

প্রবাসীদের ভোটের জন্য আসছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ

প্রবাসীদের ভোটের জন্য আসছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধনের জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের অ্যাপ তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

১৯ ঘণ্টা আগে

ঢাকায় ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স

ঢাকায় ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অত্যাধুনিক ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ভিসা প্রার্থী বাংলাদেশি আবেদনকারীদের উন্নত সেবা প্রদানের জন্য আবেদন কেন্দ্রটি চালু করা হয়।

১ দিন আগে

প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন শুরু হতে পারে অক্টোবরে

প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন শুরু হতে পারে অক্টোবরে

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা আছে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

১ দিন আগে

লি‌বিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৭৬ বাংলাদে‌শি

লি‌বিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৭৬ বাংলাদে‌শি

অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে গিয়ে লিবিয়ায় ধরা পড়া ১৭৬ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।

১ দিন আগে