বিডিজেন ডেস্ক
আরব বিশ্বের ছোট্ট একটি দেশ কুয়েত। দেশটি স্টেট অব কুয়েত নামেও পরিচিত। দেশটির অবস্থান পারস্য উপসাগরের প্রান্তে। ইরাক ও সৌদি আরবের সঙ্গে কুয়েতের সীমান্ত রয়েছে। কুয়েতের পশ্চিম ও উত্তরে ইরাক, পূর্বে পারস্য উপসাগর এবং দক্ষিণে সৌদি আরব।
কুয়েত উপসাগরের পশ্চিম প্রান্তে আল-জাহরা মরূদ্যান এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও উপকূলীয় অঞ্চলে কয়েকটি উর্বর অংশ ছাড়া কুয়েত মূলত একটি মরুভূমি। কুয়েতি ভূখণ্ডে নয়টি উপকূলীয় দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় জনবসতিহীন দ্বীপ বুবিয়ান ও আল ওয়ারবাহ। ফায়লাকাহ দ্বীপ কুয়েত উপসাগরের প্রবেশদ্বারের কাছে অবস্থিত। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে দ্বীপটি জনবহুল।
কুয়েতে কোনো নদী এবং প্রাকৃতিক পানি নেই। ফলে চাষবাস হয় না বললেই চলে।
অটোমানদের হুমকির মুখে ১৮৯৯ সালে কুয়েতকে একটি ব্রিটিশ আশ্রিত দেশ বলে ঘোষণা করা হয়। সেই সময়ে সাবাহ পরিবার কুয়েতের শাসন ক্ষমতায় থাকলেও দেশটি ব্রিটিশ সংরক্ষণাধীন দেশ হিসেবেই বিবেচিত হতো।
১৯৬১ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে পুরোপুরি স্বাধীনতা লাভ করে কুয়েত।
১৯৯০ সালের আগস্টে কুয়েত দখল করেছিল প্রতিবেশী দেশ ইরাক। এর আগে ২০ জুলাই থেকেই কুয়েত ঘিরে সেনা মোতায়েন শুরু করেছিল ইরাক। ২ আগস্ট বেলা ২টার দিকে কুয়েতে হামলা শুরু করে ইরাকি বাহিনী। এ হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন।
সামরিক শক্তির দিক দিয়ে ইরাকের অবস্থান তখন ছিল বিশ্বে পঞ্চম। তাদের সামনে কুয়েতের সক্ষমতা ছিল খুবই সামান্য। ইরাকের হামলার শুরুর পর তা মাত্র ১৪ ঘণ্টা পূর্ণ মাত্রায় প্রতিরোধ করতে পেরেছিল কুয়েতি সেনারা। সহজেই কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটি দখল করে নেয় ইরাকের সেনারা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান কুয়েতের তৎকালীন আমির শেখ জাবির আল–আহমাদ আল–জাবির আল–সাবাহ এবং আল সাবাহ পরিবারের সব সদস্য। প্রাসাদে শুধু ছিলেন আমিরের সৎভাই শেখ ফাহাদ আল আহমেদ আল সাবাহ। তিনি যেতে রাজি হননি। ইরাকি সেনারা তাঁকে দেখামাত্রই গুলি করে হত্যা করেছিল।
আল সাবাহ পরিবার সৌদি আরবে গিয়ে নির্বাসিত সরকার গঠন করে। এই সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসেন যুবরাজ সাদ আল–আবদুল্লাহ আল–সালিম আল–সাবাহ। বিদেশে থাকা বেশির ভাগ কুয়েতি সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেন সাবাহ পরিবারের আরেক সদস্য শেখ আলী আল–খলিফাহ আল–সাবাহ। সে সময় এর মূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার।
কুয়েত দখলের পর ৪ আগস্ট দেশটিতে পুতুল সরকার বসায় সাদ্দাম হোসেন। নাম দেওয়া হয় ‘কুয়েতিদের মুক্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকার’। এরপর ৮ আগস্ট কুয়েতকে ইরাকের ১৯তম প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করে ইরাক। এখানেই থেমে থাকেননি সাদ্দাম হোসেন। তাঁর নির্দেশে সৌদি আরবের সীমান্তের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ইরাকি বাহিনী। এর ফলে সৌদি আরবে হামলার আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে।
তখন এই ঘটনা বিশ্বে মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। কুয়েতে ইরাকের হামলার তীব্র নিন্দা জানায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
৬ আগস্ট কুয়েত থেকে অবিলম্বে ও বিনা শর্তে ইরাকি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। একইসঙ্গে ইরাকের ওপর অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ ছাড়া, ১৯৯১ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কুয়েত থেকে সেনা না সরালে ‘যেকোনো উপায়ে’ ইরাককে বাধ্য করার জন্য একটি প্রস্তাব পাস হয় নিরাপত্তা পরিষদে।
জাতিসংঘের এই সময়সীমা না মানলে ইরাক তথা সাদ্দাম হোসেনকে শায়েস্তা করার জন্য তৎপরতা শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। তিনি ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গড়ে তোলেন।
জাতিসংঘের নির্ধারিত ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কুয়েত থেকে ইরাকি সেনারা না সরে যাওয়ায় ১৭ জানুয়ারি ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম’ নামে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী। কুয়েত ও ইরাকের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপক বোমা হামলা চালানো হয়। ৪৩ দিন ধরে চলে এই অভিযান। শেষ পর্যন্ত ২৭ ফেব্রুয়ারি কুয়েত মুক্ত হয়।
বর্তমান কুয়েতকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে আল–সাবাহ পরিবার। ৩০০ বছর ধরে দেশটি শাসন করছে আল সাবাহ পরিবার। এই পরিবারের মাধ্যমে কুয়েত শাসিত হয়।
কুয়েতের সংবিধান অনুযায়ী, আমির ও ক্রাউন প্রিন্স পদের উত্তরাধিকার ঐতিহ্যগতভাবে শুধুমাত্র মুবারক আল-সাবাহর বংশধরদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
উপসাগরীয় যেকোনো নির্বাচিত সংস্থার চেয়ে বেশি ক্ষমতা রাখে এই আল সাবাহ পরিবার। যেকোনো সরকারি এবং নির্বাহী পদের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাদের।
এমনকি রাজনৈতিক বিষয়ে আমিরের কথাই শেষ কথা বলে স্বীকৃত। তবে পার্লামেন্টের বিরোধী দল প্রকাশ্যে সাবাহদের সমালোচনা করতে পারে।
আল সাবাহ পরিবারের ইতিহাস
কুয়েত পিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, আল সাবাহ মূলত পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় উপজাতি গোষ্ঠী 'আনাজা' থেকে এসেছে।
যারা ছিল আদনানি আরব উপজাতি। অর্থাৎ যারা আনজা বিন আসাদ বিন রাবিয়া বিন নিজর বিন মাদ বিন আদনান বংশধারার অন্তর্ভুক্ত।
কুয়েতের ইতিহাস নিয়ে লেখা ‘দ্য অরিজিন অব কুয়েত’ বই অনুসারে, আল সাবাহ পরিবারের উদ্ভব হয়েছে বনি উতবাহ সংঘ থেকে।
সেখানে বলা হয়, ১৭১০ খ্রিষ্টাব্দে মধ্য আরবে খরা দেখা দিলে সাবাহ পরিবার সেখান থেকে পালিয়ে প্রথমে দক্ষিণে যায়।
এরপর বিভিন্ন জায়গায় বসতি স্থাপনের চেষ্টা করলেও তারা পারেনি। পরে তারা উত্তর কুয়েতের পথে পা বাড়ান। সেখানে পানির উৎস খুঁজে পেলে অবশেষে তারা স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন।
যাত্রার এই শেষ পর্যায়কে অ্যারাবিক ভাষায় আতাবু-ইলা আল-শিমাল বা উত্তরে সরে যাওয়া বলা হয়।
সেখান থেকে বনি উতুব বা বনি উতবাহ নামের উৎপত্তি। কুয়েতে বসতি স্থাপনের পরপরই সাবাহরা ওই অঞ্চল শাসন করতে শুরু করে।
মুখে মুখে প্রচলিত আরেক ইতিহাস অনুযায়ী, আল সাবাহ পরিবার কুয়েতে বসবাসের আগে দক্ষিণ ইরান এবং ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে বসতি স্থাপন করেছিল। এরপর ১৭শ শতকের শুরুর দিকে তারা আজকের কুয়েতে বসতি স্থাপন করে।
আল-সাবাহ পরিবারের গোড়াপত্তন করেছিলেন আমির সাবাহ প্রথম জাবের আল-সাবাহ।
তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অর্থাৎ ১৭৫২ থেকে ১৭৭৬ সাল পর্যন্ত দেশটি শাসন করেছেন। বর্তমানে তাদের ১৭তম বংশধর শেখ মিশেলের হাতে দেশের শাসনভার রয়েছে।
শেখ মিশেলের আগে কুয়েতের ১৬তম আমির (২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে) ছিলেন শেখ নওয়াফ আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ। তাঁর মৃত্যুর পর কুয়েতের নতুন আমির হিসেবে ৮৩ বছর বয়সী শেখ মিশেল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহর নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি শেখ নওয়াফের চাচাতো ভাই। আমির হওয়ার আগে তিনি ক্রাউন প্রিন্স পদে ছিলেন।
কুয়েতের সংবিধান এবং সিংহাসনের উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, শেখ মিশেল হলেন দেশের ১৭তম শাসক এবং পার্লামেন্টের সামনে সাংবিধানিক শপথ গ্রহণ করা সপ্তম শাসক।
শেখ নাওয়াফের আগে ১৫তম আমির (২০০৬ থেকে) ছিলেন তাঁর সৎ ভাই শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ। তিনি আমির নির্বাচিত হওয়ার আগে ৫০ বছর ধরে দেশটির পররাষ্ট্রনীতির তত্বাবধান করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতির ক্ষেত্রে তাঁর সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁকে 'ডিন অব আরব ডিপ্লোম্যাসি' বলা হতো।
১৩তম আমির ছিলেন শেখ জাবির আল–আহমাদ আল–জাবির আল–সাবাহ। তিনি ১৯৭৭ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমির ছিলেন। তাঁর শাসনামলেই ইরাক কুয়েত দখল করে।
২০০৬ সালে শেখ জাবির আল–আহমাদ আল–জাবির আল–সাবাহর মৃত্যুর পর সাদ আল-সাবাহ কুয়েতের ১৪তম আমির হন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার কারণে নয় দিন পর দেশটির সংসদ তাঁকে সরিয়ে দেয়।
সংস্কৃতি
কুয়েত আরব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং ইসলামী ধর্মীয় অনুশাসনে প্রভাবিত। কুয়েতিদের দৈনন্দিন জীবনে ইসলামী সংস্কৃতি গভীরভাবে মিশে আছে। ইসলামী ঐতিহ্য ও আচার-অনুষ্ঠানের চর্চা ব্যাপক। কুয়েতি আতিথেয়তা, ইসলামী মূল্যবোধে প্রভাবিত। অতিথিদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো এবং ঐতিহ্যবাহী আরবি কফি ও খেজুর দেওয়া হয়। ইসলামিক উৎসব, যেমন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পরিবার ও স্বজনদের একত্রিত করে উৎসাহের সঙ্গে উদযাপিত হয়। এর ওপর ভিত্তি করে বর্তমান আধুনিক রাষ্ট্র কুয়েত।
তেল আবিষ্কারের ফলে জীবনধারায় যে রূপান্তর ঘটেছে তা কুয়েতের সামাজিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন করেনি। কুয়েতে এখনো অন্য আরব দেশের মতো সামাজিক সংস্কৃতিতে পারিবারিক বন্ধন অত্যন্ত সুদৃঢ়। প্রাচীন যুগ থেকেই কুয়েতিরা সামাজিক সংস্কৃতিতে বংশের বন্ধনটিকে যেমন গুরুত্ত্ব প্রদান করে থাকে, তেমনি পরিবারের সদস্য, স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধুত্ত্বকে অত্যন্ত গুরুত্ত্ব ও সম্মানের চোখে দেখে থাকে। সামাজিক সংস্কৃতি, আচার ব্যবহার, অনুষ্ঠান, পার্বণ একসঙ্গে উদযাপনে তাদের জুড়ি নেই। এসব কুয়েতিরা জীবনের অন্যতম গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশই মনে করেন।
আয়তন
১৭ হাজার ৮১৮বর্গ কিলোমিটার। ফিজি দ্বীপ রাষ্ট্র থেকে সামান্য ছোট। কুয়েতের পারস্য উপসাগর বরাবর প্রায় ৫০০ কিলোমিটার (৩১০ মাইল) উপকূলরেখা রয়েছে।
কুয়েতি একটি সমতল মরুভূমি। মোট ভূমির মাত্র ০ দশমিক ২৮ শতাংশ খেজুর চাষ হয়। দেশটিতে মোট ৮৬ বর্গমাইল সেচযোগ্য ফসলি জমি রয়েছে।
কুয়েত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৪ ফুট উপরে অবস্থিত।
কুয়েতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় ৭৫ থেকে ১৫৫ মিলিমিটার। গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মার্চ ও এপ্রিল মাসে প্রায়ই বড় ধুলো ঝড় হয়। এই ঝড় ইরাক থেকে উত্তর-পশ্চিমি বাতাসের সঙ্গে প্রবাহিত হয়। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে শীত। এই সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও হয়।
অর্থনীতি
কুয়েতে প্রথম তেলের খনি পাওয়া যায় ১৯৩৮ সালে। দেশটির ৯০ ভাগ আয় আসে তেল থেকেই। বিশ্বের সপ্তম বৃহৎ তেলের মজুদ রয়েছে কুয়েতে।
ওপেকের তথ্যানুসারে, কুয়েতের তেলের মজুত ১০১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ১৫০ কোটি ব্যারেল। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ছোট এ দেশ দৈনিক গড়ে ২৪ লাখ থেকে ২৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করে এবং রপ্তানি করে ১৭ লাখ ব্যারেল। (সূত্র: অয়েল প্রাইস ডটকম)
কুয়েত পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিকল্পনা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির তেল উৎপাদন দিনে ৪০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করা। তবে তেলের চাহিদা কমে যাবে, এমন পূর্বাভাসে কুয়েত বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না।
কুয়েত অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী। দেশটির মুদ্রার মান পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার মধ্যে কুয়েতি দিনার অন্যতম।
১৯৪৬ সালের পর থেকে দেশটির অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
রাজধানী
কুয়েত সিটি
প্রশাসনিক অঞ্চল
৬টি
জেলা
১১টি
সরকারি ভাষা
আরবি।
পার্লামেন্ট
কুয়েতে ভোটের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠিত হয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও ভোটাধিকার রয়েছে। ২০০৫ সালে নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়েছে। এ ছাড়া, নারীদের রাজনীতি করার অধিকারও রয়েছে।
দেশটিতে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যরা সরকারের সমালোচনা করতে পারেন। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে আমিরের (শাসক) সিদ্ধান্তই শেষ কথা। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে তার হাতে।
শাসক
বর্তমানে দেশটির শাসক (আমির) শেখ মিশেল আল-আহমেদ আল-সাবাহ। তিনি ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বরে আমির হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।
আরব বিশ্বের ছোট্ট একটি দেশ কুয়েত। দেশটি স্টেট অব কুয়েত নামেও পরিচিত। দেশটির অবস্থান পারস্য উপসাগরের প্রান্তে। ইরাক ও সৌদি আরবের সঙ্গে কুয়েতের সীমান্ত রয়েছে। কুয়েতের পশ্চিম ও উত্তরে ইরাক, পূর্বে পারস্য উপসাগর এবং দক্ষিণে সৌদি আরব।
কুয়েত উপসাগরের পশ্চিম প্রান্তে আল-জাহরা মরূদ্যান এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও উপকূলীয় অঞ্চলে কয়েকটি উর্বর অংশ ছাড়া কুয়েত মূলত একটি মরুভূমি। কুয়েতি ভূখণ্ডে নয়টি উপকূলীয় দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় জনবসতিহীন দ্বীপ বুবিয়ান ও আল ওয়ারবাহ। ফায়লাকাহ দ্বীপ কুয়েত উপসাগরের প্রবেশদ্বারের কাছে অবস্থিত। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে দ্বীপটি জনবহুল।
কুয়েতে কোনো নদী এবং প্রাকৃতিক পানি নেই। ফলে চাষবাস হয় না বললেই চলে।
অটোমানদের হুমকির মুখে ১৮৯৯ সালে কুয়েতকে একটি ব্রিটিশ আশ্রিত দেশ বলে ঘোষণা করা হয়। সেই সময়ে সাবাহ পরিবার কুয়েতের শাসন ক্ষমতায় থাকলেও দেশটি ব্রিটিশ সংরক্ষণাধীন দেশ হিসেবেই বিবেচিত হতো।
১৯৬১ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে পুরোপুরি স্বাধীনতা লাভ করে কুয়েত।
১৯৯০ সালের আগস্টে কুয়েত দখল করেছিল প্রতিবেশী দেশ ইরাক। এর আগে ২০ জুলাই থেকেই কুয়েত ঘিরে সেনা মোতায়েন শুরু করেছিল ইরাক। ২ আগস্ট বেলা ২টার দিকে কুয়েতে হামলা শুরু করে ইরাকি বাহিনী। এ হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন।
সামরিক শক্তির দিক দিয়ে ইরাকের অবস্থান তখন ছিল বিশ্বে পঞ্চম। তাদের সামনে কুয়েতের সক্ষমতা ছিল খুবই সামান্য। ইরাকের হামলার শুরুর পর তা মাত্র ১৪ ঘণ্টা পূর্ণ মাত্রায় প্রতিরোধ করতে পেরেছিল কুয়েতি সেনারা। সহজেই কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটি দখল করে নেয় ইরাকের সেনারা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান কুয়েতের তৎকালীন আমির শেখ জাবির আল–আহমাদ আল–জাবির আল–সাবাহ এবং আল সাবাহ পরিবারের সব সদস্য। প্রাসাদে শুধু ছিলেন আমিরের সৎভাই শেখ ফাহাদ আল আহমেদ আল সাবাহ। তিনি যেতে রাজি হননি। ইরাকি সেনারা তাঁকে দেখামাত্রই গুলি করে হত্যা করেছিল।
আল সাবাহ পরিবার সৌদি আরবে গিয়ে নির্বাসিত সরকার গঠন করে। এই সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসেন যুবরাজ সাদ আল–আবদুল্লাহ আল–সালিম আল–সাবাহ। বিদেশে থাকা বেশির ভাগ কুয়েতি সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেন সাবাহ পরিবারের আরেক সদস্য শেখ আলী আল–খলিফাহ আল–সাবাহ। সে সময় এর মূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার।
কুয়েত দখলের পর ৪ আগস্ট দেশটিতে পুতুল সরকার বসায় সাদ্দাম হোসেন। নাম দেওয়া হয় ‘কুয়েতিদের মুক্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকার’। এরপর ৮ আগস্ট কুয়েতকে ইরাকের ১৯তম প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করে ইরাক। এখানেই থেমে থাকেননি সাদ্দাম হোসেন। তাঁর নির্দেশে সৌদি আরবের সীমান্তের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ইরাকি বাহিনী। এর ফলে সৌদি আরবে হামলার আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে।
তখন এই ঘটনা বিশ্বে মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। কুয়েতে ইরাকের হামলার তীব্র নিন্দা জানায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
৬ আগস্ট কুয়েত থেকে অবিলম্বে ও বিনা শর্তে ইরাকি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। একইসঙ্গে ইরাকের ওপর অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ ছাড়া, ১৯৯১ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কুয়েত থেকে সেনা না সরালে ‘যেকোনো উপায়ে’ ইরাককে বাধ্য করার জন্য একটি প্রস্তাব পাস হয় নিরাপত্তা পরিষদে।
জাতিসংঘের এই সময়সীমা না মানলে ইরাক তথা সাদ্দাম হোসেনকে শায়েস্তা করার জন্য তৎপরতা শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। তিনি ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গড়ে তোলেন।
জাতিসংঘের নির্ধারিত ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কুয়েত থেকে ইরাকি সেনারা না সরে যাওয়ায় ১৭ জানুয়ারি ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম’ নামে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী। কুয়েত ও ইরাকের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপক বোমা হামলা চালানো হয়। ৪৩ দিন ধরে চলে এই অভিযান। শেষ পর্যন্ত ২৭ ফেব্রুয়ারি কুয়েত মুক্ত হয়।
বর্তমান কুয়েতকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে আল–সাবাহ পরিবার। ৩০০ বছর ধরে দেশটি শাসন করছে আল সাবাহ পরিবার। এই পরিবারের মাধ্যমে কুয়েত শাসিত হয়।
কুয়েতের সংবিধান অনুযায়ী, আমির ও ক্রাউন প্রিন্স পদের উত্তরাধিকার ঐতিহ্যগতভাবে শুধুমাত্র মুবারক আল-সাবাহর বংশধরদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
উপসাগরীয় যেকোনো নির্বাচিত সংস্থার চেয়ে বেশি ক্ষমতা রাখে এই আল সাবাহ পরিবার। যেকোনো সরকারি এবং নির্বাহী পদের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাদের।
এমনকি রাজনৈতিক বিষয়ে আমিরের কথাই শেষ কথা বলে স্বীকৃত। তবে পার্লামেন্টের বিরোধী দল প্রকাশ্যে সাবাহদের সমালোচনা করতে পারে।
আল সাবাহ পরিবারের ইতিহাস
কুয়েত পিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, আল সাবাহ মূলত পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় উপজাতি গোষ্ঠী 'আনাজা' থেকে এসেছে।
যারা ছিল আদনানি আরব উপজাতি। অর্থাৎ যারা আনজা বিন আসাদ বিন রাবিয়া বিন নিজর বিন মাদ বিন আদনান বংশধারার অন্তর্ভুক্ত।
কুয়েতের ইতিহাস নিয়ে লেখা ‘দ্য অরিজিন অব কুয়েত’ বই অনুসারে, আল সাবাহ পরিবারের উদ্ভব হয়েছে বনি উতবাহ সংঘ থেকে।
সেখানে বলা হয়, ১৭১০ খ্রিষ্টাব্দে মধ্য আরবে খরা দেখা দিলে সাবাহ পরিবার সেখান থেকে পালিয়ে প্রথমে দক্ষিণে যায়।
এরপর বিভিন্ন জায়গায় বসতি স্থাপনের চেষ্টা করলেও তারা পারেনি। পরে তারা উত্তর কুয়েতের পথে পা বাড়ান। সেখানে পানির উৎস খুঁজে পেলে অবশেষে তারা স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন।
যাত্রার এই শেষ পর্যায়কে অ্যারাবিক ভাষায় আতাবু-ইলা আল-শিমাল বা উত্তরে সরে যাওয়া বলা হয়।
সেখান থেকে বনি উতুব বা বনি উতবাহ নামের উৎপত্তি। কুয়েতে বসতি স্থাপনের পরপরই সাবাহরা ওই অঞ্চল শাসন করতে শুরু করে।
মুখে মুখে প্রচলিত আরেক ইতিহাস অনুযায়ী, আল সাবাহ পরিবার কুয়েতে বসবাসের আগে দক্ষিণ ইরান এবং ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে বসতি স্থাপন করেছিল। এরপর ১৭শ শতকের শুরুর দিকে তারা আজকের কুয়েতে বসতি স্থাপন করে।
আল-সাবাহ পরিবারের গোড়াপত্তন করেছিলেন আমির সাবাহ প্রথম জাবের আল-সাবাহ।
তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অর্থাৎ ১৭৫২ থেকে ১৭৭৬ সাল পর্যন্ত দেশটি শাসন করেছেন। বর্তমানে তাদের ১৭তম বংশধর শেখ মিশেলের হাতে দেশের শাসনভার রয়েছে।
শেখ মিশেলের আগে কুয়েতের ১৬তম আমির (২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে) ছিলেন শেখ নওয়াফ আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ। তাঁর মৃত্যুর পর কুয়েতের নতুন আমির হিসেবে ৮৩ বছর বয়সী শেখ মিশেল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহর নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি শেখ নওয়াফের চাচাতো ভাই। আমির হওয়ার আগে তিনি ক্রাউন প্রিন্স পদে ছিলেন।
কুয়েতের সংবিধান এবং সিংহাসনের উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, শেখ মিশেল হলেন দেশের ১৭তম শাসক এবং পার্লামেন্টের সামনে সাংবিধানিক শপথ গ্রহণ করা সপ্তম শাসক।
শেখ নাওয়াফের আগে ১৫তম আমির (২০০৬ থেকে) ছিলেন তাঁর সৎ ভাই শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ। তিনি আমির নির্বাচিত হওয়ার আগে ৫০ বছর ধরে দেশটির পররাষ্ট্রনীতির তত্বাবধান করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতির ক্ষেত্রে তাঁর সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁকে 'ডিন অব আরব ডিপ্লোম্যাসি' বলা হতো।
১৩তম আমির ছিলেন শেখ জাবির আল–আহমাদ আল–জাবির আল–সাবাহ। তিনি ১৯৭৭ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমির ছিলেন। তাঁর শাসনামলেই ইরাক কুয়েত দখল করে।
২০০৬ সালে শেখ জাবির আল–আহমাদ আল–জাবির আল–সাবাহর মৃত্যুর পর সাদ আল-সাবাহ কুয়েতের ১৪তম আমির হন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার কারণে নয় দিন পর দেশটির সংসদ তাঁকে সরিয়ে দেয়।
সংস্কৃতি
কুয়েত আরব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং ইসলামী ধর্মীয় অনুশাসনে প্রভাবিত। কুয়েতিদের দৈনন্দিন জীবনে ইসলামী সংস্কৃতি গভীরভাবে মিশে আছে। ইসলামী ঐতিহ্য ও আচার-অনুষ্ঠানের চর্চা ব্যাপক। কুয়েতি আতিথেয়তা, ইসলামী মূল্যবোধে প্রভাবিত। অতিথিদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো এবং ঐতিহ্যবাহী আরবি কফি ও খেজুর দেওয়া হয়। ইসলামিক উৎসব, যেমন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পরিবার ও স্বজনদের একত্রিত করে উৎসাহের সঙ্গে উদযাপিত হয়। এর ওপর ভিত্তি করে বর্তমান আধুনিক রাষ্ট্র কুয়েত।
তেল আবিষ্কারের ফলে জীবনধারায় যে রূপান্তর ঘটেছে তা কুয়েতের সামাজিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন করেনি। কুয়েতে এখনো অন্য আরব দেশের মতো সামাজিক সংস্কৃতিতে পারিবারিক বন্ধন অত্যন্ত সুদৃঢ়। প্রাচীন যুগ থেকেই কুয়েতিরা সামাজিক সংস্কৃতিতে বংশের বন্ধনটিকে যেমন গুরুত্ত্ব প্রদান করে থাকে, তেমনি পরিবারের সদস্য, স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধুত্ত্বকে অত্যন্ত গুরুত্ত্ব ও সম্মানের চোখে দেখে থাকে। সামাজিক সংস্কৃতি, আচার ব্যবহার, অনুষ্ঠান, পার্বণ একসঙ্গে উদযাপনে তাদের জুড়ি নেই। এসব কুয়েতিরা জীবনের অন্যতম গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশই মনে করেন।
আয়তন
১৭ হাজার ৮১৮বর্গ কিলোমিটার। ফিজি দ্বীপ রাষ্ট্র থেকে সামান্য ছোট। কুয়েতের পারস্য উপসাগর বরাবর প্রায় ৫০০ কিলোমিটার (৩১০ মাইল) উপকূলরেখা রয়েছে।
কুয়েতি একটি সমতল মরুভূমি। মোট ভূমির মাত্র ০ দশমিক ২৮ শতাংশ খেজুর চাষ হয়। দেশটিতে মোট ৮৬ বর্গমাইল সেচযোগ্য ফসলি জমি রয়েছে।
কুয়েত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৪ ফুট উপরে অবস্থিত।
কুয়েতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় ৭৫ থেকে ১৫৫ মিলিমিটার। গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মার্চ ও এপ্রিল মাসে প্রায়ই বড় ধুলো ঝড় হয়। এই ঝড় ইরাক থেকে উত্তর-পশ্চিমি বাতাসের সঙ্গে প্রবাহিত হয়। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে শীত। এই সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও হয়।
অর্থনীতি
কুয়েতে প্রথম তেলের খনি পাওয়া যায় ১৯৩৮ সালে। দেশটির ৯০ ভাগ আয় আসে তেল থেকেই। বিশ্বের সপ্তম বৃহৎ তেলের মজুদ রয়েছে কুয়েতে।
ওপেকের তথ্যানুসারে, কুয়েতের তেলের মজুত ১০১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ১৫০ কোটি ব্যারেল। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ছোট এ দেশ দৈনিক গড়ে ২৪ লাখ থেকে ২৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করে এবং রপ্তানি করে ১৭ লাখ ব্যারেল। (সূত্র: অয়েল প্রাইস ডটকম)
কুয়েত পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিকল্পনা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির তেল উৎপাদন দিনে ৪০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করা। তবে তেলের চাহিদা কমে যাবে, এমন পূর্বাভাসে কুয়েত বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না।
কুয়েত অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী। দেশটির মুদ্রার মান পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার মধ্যে কুয়েতি দিনার অন্যতম।
১৯৪৬ সালের পর থেকে দেশটির অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
রাজধানী
কুয়েত সিটি
প্রশাসনিক অঞ্চল
৬টি
জেলা
১১টি
সরকারি ভাষা
আরবি।
পার্লামেন্ট
কুয়েতে ভোটের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠিত হয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও ভোটাধিকার রয়েছে। ২০০৫ সালে নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়েছে। এ ছাড়া, নারীদের রাজনীতি করার অধিকারও রয়েছে।
দেশটিতে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যরা সরকারের সমালোচনা করতে পারেন। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে আমিরের (শাসক) সিদ্ধান্তই শেষ কথা। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে তার হাতে।
শাসক
বর্তমানে দেশটির শাসক (আমির) শেখ মিশেল আল-আহমেদ আল-সাবাহ। তিনি ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বরে আমির হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।
তাঁর ক্যারিয়ারে প্রশংসিত ও জনপ্রিয় ছবির সংখ্যাও কম নয়। ৩৩ বছরের দীর্ঘ পথচলা। তবু এত দিন অধরা ছিল জাতীয় স্বীকৃতি। অবশেষে এল সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মানে ভূষিত হলেন বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খান।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে ইসরায়েল তাদের বেশির ভাগ কূটনৈতিক কর্মী ফিরিয়ে আনছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি) উপসাগরীয় দেশটিতে ইসরায়েলিদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করার পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি।
মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলীয় মহাসড়কে (ইস্ট কোস্ট হাইওয়ে) মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে তিন বাংলাদেশি নাগরিক। আহত হয়েছে আরও দুজন। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুয়ানতান শহরের কাছে মহাসড়কের কিলোমিটার ২০০ দশমিক ৮ নম্বর পয়েন্ট পিলারের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।