
শাহাবুদ্দিন শুভ

বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রচারণা মানে উৎসব, প্রতিযোগিতা আর উত্তেজনার মিশেল। সেখানে সময়ের হিসাব কখনোই খুব কঠোর থাকে না। সভা শুরু হতে হতে ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। কিন্তু ফ্রান্সে এসে দেখলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চিত্র। যেখানে সময়, শৃঙ্খলা ও অংশগ্রহণ মিলে তৈরি হয়েছে এক অনন্য গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। লু ক্রুসো (Le Creusot) শহরের মেয়র ডেভিড মার্টির নির্বাচনী প্রচারণার উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত থেকে আমি যেন দেখলাম গণতন্ত্রের এক নতুন পাঠ।
সভাস্থলে প্রথম অভিজ্ঞতা
আমরা প্রতিনিয়ত কত কিছু জানি, কত কিছু শিখি। তেমনি এক নতুন অভিজ্ঞতা হলো ফ্রান্সে নির্বাচনী প্রচারণা দেখা। বাংলাদেশে একটা সংসদীয় আসনের নির্বাচনে পরিচালনার অভিজ্ঞতা আমার আছে। জানি, নির্বাচন মানে কত রকম দৌড়ঝাঁপ, কত ব্যস্ততা, কত জটিলতা। বিশেষ করে সভার সময় মানুষ জড়ো করা, তাদের ধরে রাখা, প্রার্থী আসার অপেক্ষা, মাইকের ঝামেলা—সব মিলিয়ে সেটি এক বিশাল কর্মযজ্ঞ।

কিন্তু ফ্রান্সে এসে দেখলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। লু ক্রুসোর মেয়র ডেভিড মার্টির নির্বাচনী প্রচারণার উদ্বোধনী সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে। আমি গেলাম প্রায় আধা ঘণ্টা আগে। মিলনায়তনে তখন হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ, ৭-৮ জনের বেশি নয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, প্রার্থী নিজেই তখন উপস্থিত! তিনি নিজে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছেন, কথা বলছেন, হাসিমুখে পরিবেশটা উষ্ণ করে তুলছেন।
আমি মনে মনে ভাবছি, ‘এই সভা কি সফল হবে?’ কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো—মিলনায়তন কানায় কানায় পূর্ণ, মানুষের ঢল নেমে এল। নির্ধারিত আসনের চেয়ে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ বেশি উপস্থিত হয়েছিলেন। সময় মতো সভা শুরু হলো, কোনো বিশৃঙ্খলা নয়, কেবল সংগঠন, শৃঙ্খলা আর সম্মান।
সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
মঞ্চটি ছিল বড় ও সুসজ্জিত। ডান পাশে বাদ্যযন্ত্রীরা (মিউজিশিয়ান) তাদের বাদ্যযন্ত্র সাজিয়ে রেখেছেন, মাঝখানে ৬ জনের বসার আসন, আর বাঁ পাশে দুটি ডায়াস। ডেভিড মার্টি নিজে মঞ্চে উঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিলেন। মাত্র ৭-৮ মিনিটে তিনি তাঁর মূল বার্তা শেষ করেন।

এরপরই শুরু হয় সুরের ছোঁয়া। একদল শিল্পী পরিবেশন করলেন সংগীত। তারপর একজন বিশেষজ্ঞ মঞ্চে ওঠেন, সঙ্গে ৬ জন প্যানেলিস্ট; তারা শহরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, নাগরিক প্রত্যাশা ও সামাজিক বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন। ডেভিড মনোযোগ দিয়ে নোট নিলেন, মাঝে মাঝে সরাসরি উত্তরও দিলেন। এই সেশন শেষ হলে আবার সংগীত, এরপর আরও ৬ জন বিশেষজ্ঞ মঞ্চে উঠে তাদের মতামত তুলে ধরলেন।
সব মিলিয়ে এটি ছিল গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের এক জীবন্ত উদাহরণ। কোনো বিলম্ব নেই, কোনো হট্টগোল নেই; বরং সবার জন্য সুযোগ, শ্রদ্ধা ও সময়ের মূল্যায়ন। আমি উপলব্ধি করলাম, গণতন্ত্র কেবল ভোটের অধিকার নয়, এটি এক সংস্কৃতি, যেখানে সময়, শৃঙ্খলা ও শ্রদ্ধা একসঙ্গে কাজ করে।
ডেভিড মার্টির ইতিবাচক নেতৃত্ব
সভায় ডেভিড মার্টি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, বিনয়ী ও সংযত ভাষায় কথা বলা এক নেতা।
তিনি বলেন, ‘লু ক্রুসো মানে আপনারা। আপনারাই এই শহরের প্রাণ। আপনাদের উপস্থিতিই আমাদের কাজের স্বীকৃতি।’

তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট —লু ক্রুসো এমন একটি শহর হবে, যা কাজ করে, উদ্ভাবন করে, এবং প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ভবিষ্যতের প্রতি বিশ্বাস রাখে।
তিনি এই সভাকে শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রচারণা নয়, বরং নাগরিক অংশগ্রহণের উৎসব হিসেবে দেখেছেন।
সভায় দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা দেন তাঁর নির্বাচনী স্লোগান: ‘Le Creusot, un avenir, une ambition 2026’ অর্থাৎ, লু ক্রুসো: এক ভবিষ্যৎ, এক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ২০২৬।
মেয়রের প্রতিশ্রুতি ও পরিকল্পনা
ডেভিড মার্টি স্পষ্ট করে বলেন, তার রাজনীতি হবে বাস্তব কাজের রাজনীতি, প্রতিশ্রুতির নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতির রাজনীতি করি না, আমরা বাস্তবায়নের রাজনীতি করি।’
তার বক্তব্যে উঠে আসে কয়েকটি অনুপ্রেরণাদায়ক পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি —*মানবিক ও সংহত শহর গঠন, লু ক্রুসোকে এমন এক শহরে পরিণত করা, যেখানে জাতি, ধর্ম, ভাষা বা বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একে অপরের পাশে থাকবে।

*নাগরিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
তিনি ঘোষণা দেন, নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনী প্রোগ্রাম তৈরি হবে।
প্রথম কর্মশালা হবে ৩০ অক্টোবর, যেখানে সাধারণ মানুষ সরাসরি মতামত দিতে পারবেন।
*উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের ধারাবাহিকতা
শহরের শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
*ঐক্য ও সহাবস্থানের রাজনীতি
তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল—‘আমরা বিভাজনের নয়, ঐক্যের পক্ষে।’
এই বার্তা শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীকও বটে।
দর্শকদের প্রত্যাশা ও সংলাপ
সভায় উপস্থিত নাগরিকেরাও ছিলেন সক্রিয় ও প্রশ্নমুখর। তারা সরাসরি মেয়রের কাছে জানতে চেয়েছেন শহরের নিরাপত্তা, যুবকদের কর্মসংস্থান, সামাজিক সেবা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে। ডেভিড মার্টি প্রত্যেকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন, প্রয়োজনে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শক্তি হলো জনগণ। লু ক্রুসো মানে আপনাদের আশা, আপনাদের স্বপ্ন।’ তার এই অংশগ্রহণমূলক আচরণ প্রমাণ করে, তিনি কেবল বক্তা নন, একজন শ্রোতাও। রাজনীতিতে এমন শ্রদ্ধাশীল মনোভাব সত্যিই প্রশংসনীয়।

এই নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তাদের মধ্যে ছিলেন বুরগুন্দি ফ্রঁশ-কমতে অঞ্চলের সভাপতি জেরোম ডুরাঁ, ইউরোপীয় সংসদের সংসদ সদস্য মুরিয়েল লরঁ এবং গ্রুপ এসওএস সাঁতে ও সিনিয়রের সহসভাপতি গি সেব্বা।
আমাকে অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সালিহা মাখলুফ-মেদজগাল, যিনি ইনস্টিটিউশনাল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক পরিচালক হিসেবে ক্রুসো-মন্তসো নগর বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন।
পরিশেষে যা বলতে চাই ডেভিড মার্টির এই সভা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এটি আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, রাজনীতি কেবল ক্ষমতার খেলা নয়, এটি মানুষকে একত্রিত করার এক শিল্প। সভা শেষে ফ্রান্সের জাতীয় সংগীত লা মার্সেইয়েজ গেয়ে সবাই দাঁড়িয়ে গেলেন।
সেই মুহূর্তে আমি অনুভব করলাম, প্রজাতন্ত্র মানে শুধু পতাকা নয়, এটি এক অদৃশ্য বন্ধন, যা মানুষকে একত্রে বেঁধে রাখে।
লু ক্রুসোর মেয়র ডেভিড মার্টি সেই বন্ধনেরই প্রতীক—একজন নেতা, যিনি মানুষের সঙ্গে, মানুষের জন্য এবং মানুষের ভেতর থেকেই নেতৃত্ব দেন।
*লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। ইমেইল: [email protected]

বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রচারণা মানে উৎসব, প্রতিযোগিতা আর উত্তেজনার মিশেল। সেখানে সময়ের হিসাব কখনোই খুব কঠোর থাকে না। সভা শুরু হতে হতে ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। কিন্তু ফ্রান্সে এসে দেখলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চিত্র। যেখানে সময়, শৃঙ্খলা ও অংশগ্রহণ মিলে তৈরি হয়েছে এক অনন্য গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। লু ক্রুসো (Le Creusot) শহরের মেয়র ডেভিড মার্টির নির্বাচনী প্রচারণার উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত থেকে আমি যেন দেখলাম গণতন্ত্রের এক নতুন পাঠ।
সভাস্থলে প্রথম অভিজ্ঞতা
আমরা প্রতিনিয়ত কত কিছু জানি, কত কিছু শিখি। তেমনি এক নতুন অভিজ্ঞতা হলো ফ্রান্সে নির্বাচনী প্রচারণা দেখা। বাংলাদেশে একটা সংসদীয় আসনের নির্বাচনে পরিচালনার অভিজ্ঞতা আমার আছে। জানি, নির্বাচন মানে কত রকম দৌড়ঝাঁপ, কত ব্যস্ততা, কত জটিলতা। বিশেষ করে সভার সময় মানুষ জড়ো করা, তাদের ধরে রাখা, প্রার্থী আসার অপেক্ষা, মাইকের ঝামেলা—সব মিলিয়ে সেটি এক বিশাল কর্মযজ্ঞ।

কিন্তু ফ্রান্সে এসে দেখলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। লু ক্রুসোর মেয়র ডেভিড মার্টির নির্বাচনী প্রচারণার উদ্বোধনী সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে। আমি গেলাম প্রায় আধা ঘণ্টা আগে। মিলনায়তনে তখন হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ, ৭-৮ জনের বেশি নয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, প্রার্থী নিজেই তখন উপস্থিত! তিনি নিজে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছেন, কথা বলছেন, হাসিমুখে পরিবেশটা উষ্ণ করে তুলছেন।
আমি মনে মনে ভাবছি, ‘এই সভা কি সফল হবে?’ কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো—মিলনায়তন কানায় কানায় পূর্ণ, মানুষের ঢল নেমে এল। নির্ধারিত আসনের চেয়ে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ বেশি উপস্থিত হয়েছিলেন। সময় মতো সভা শুরু হলো, কোনো বিশৃঙ্খলা নয়, কেবল সংগঠন, শৃঙ্খলা আর সম্মান।
সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
মঞ্চটি ছিল বড় ও সুসজ্জিত। ডান পাশে বাদ্যযন্ত্রীরা (মিউজিশিয়ান) তাদের বাদ্যযন্ত্র সাজিয়ে রেখেছেন, মাঝখানে ৬ জনের বসার আসন, আর বাঁ পাশে দুটি ডায়াস। ডেভিড মার্টি নিজে মঞ্চে উঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিলেন। মাত্র ৭-৮ মিনিটে তিনি তাঁর মূল বার্তা শেষ করেন।

এরপরই শুরু হয় সুরের ছোঁয়া। একদল শিল্পী পরিবেশন করলেন সংগীত। তারপর একজন বিশেষজ্ঞ মঞ্চে ওঠেন, সঙ্গে ৬ জন প্যানেলিস্ট; তারা শহরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, নাগরিক প্রত্যাশা ও সামাজিক বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন। ডেভিড মনোযোগ দিয়ে নোট নিলেন, মাঝে মাঝে সরাসরি উত্তরও দিলেন। এই সেশন শেষ হলে আবার সংগীত, এরপর আরও ৬ জন বিশেষজ্ঞ মঞ্চে উঠে তাদের মতামত তুলে ধরলেন।
সব মিলিয়ে এটি ছিল গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের এক জীবন্ত উদাহরণ। কোনো বিলম্ব নেই, কোনো হট্টগোল নেই; বরং সবার জন্য সুযোগ, শ্রদ্ধা ও সময়ের মূল্যায়ন। আমি উপলব্ধি করলাম, গণতন্ত্র কেবল ভোটের অধিকার নয়, এটি এক সংস্কৃতি, যেখানে সময়, শৃঙ্খলা ও শ্রদ্ধা একসঙ্গে কাজ করে।
ডেভিড মার্টির ইতিবাচক নেতৃত্ব
সভায় ডেভিড মার্টি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, বিনয়ী ও সংযত ভাষায় কথা বলা এক নেতা।
তিনি বলেন, ‘লু ক্রুসো মানে আপনারা। আপনারাই এই শহরের প্রাণ। আপনাদের উপস্থিতিই আমাদের কাজের স্বীকৃতি।’

তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট —লু ক্রুসো এমন একটি শহর হবে, যা কাজ করে, উদ্ভাবন করে, এবং প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ভবিষ্যতের প্রতি বিশ্বাস রাখে।
তিনি এই সভাকে শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রচারণা নয়, বরং নাগরিক অংশগ্রহণের উৎসব হিসেবে দেখেছেন।
সভায় দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা দেন তাঁর নির্বাচনী স্লোগান: ‘Le Creusot, un avenir, une ambition 2026’ অর্থাৎ, লু ক্রুসো: এক ভবিষ্যৎ, এক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ২০২৬।
মেয়রের প্রতিশ্রুতি ও পরিকল্পনা
ডেভিড মার্টি স্পষ্ট করে বলেন, তার রাজনীতি হবে বাস্তব কাজের রাজনীতি, প্রতিশ্রুতির নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতির রাজনীতি করি না, আমরা বাস্তবায়নের রাজনীতি করি।’
তার বক্তব্যে উঠে আসে কয়েকটি অনুপ্রেরণাদায়ক পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি —*মানবিক ও সংহত শহর গঠন, লু ক্রুসোকে এমন এক শহরে পরিণত করা, যেখানে জাতি, ধর্ম, ভাষা বা বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একে অপরের পাশে থাকবে।

*নাগরিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
তিনি ঘোষণা দেন, নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনী প্রোগ্রাম তৈরি হবে।
প্রথম কর্মশালা হবে ৩০ অক্টোবর, যেখানে সাধারণ মানুষ সরাসরি মতামত দিতে পারবেন।
*উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের ধারাবাহিকতা
শহরের শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
*ঐক্য ও সহাবস্থানের রাজনীতি
তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল—‘আমরা বিভাজনের নয়, ঐক্যের পক্ষে।’
এই বার্তা শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীকও বটে।
দর্শকদের প্রত্যাশা ও সংলাপ
সভায় উপস্থিত নাগরিকেরাও ছিলেন সক্রিয় ও প্রশ্নমুখর। তারা সরাসরি মেয়রের কাছে জানতে চেয়েছেন শহরের নিরাপত্তা, যুবকদের কর্মসংস্থান, সামাজিক সেবা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে। ডেভিড মার্টি প্রত্যেকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন, প্রয়োজনে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শক্তি হলো জনগণ। লু ক্রুসো মানে আপনাদের আশা, আপনাদের স্বপ্ন।’ তার এই অংশগ্রহণমূলক আচরণ প্রমাণ করে, তিনি কেবল বক্তা নন, একজন শ্রোতাও। রাজনীতিতে এমন শ্রদ্ধাশীল মনোভাব সত্যিই প্রশংসনীয়।

এই নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তাদের মধ্যে ছিলেন বুরগুন্দি ফ্রঁশ-কমতে অঞ্চলের সভাপতি জেরোম ডুরাঁ, ইউরোপীয় সংসদের সংসদ সদস্য মুরিয়েল লরঁ এবং গ্রুপ এসওএস সাঁতে ও সিনিয়রের সহসভাপতি গি সেব্বা।
আমাকে অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সালিহা মাখলুফ-মেদজগাল, যিনি ইনস্টিটিউশনাল ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক পরিচালক হিসেবে ক্রুসো-মন্তসো নগর বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন।
পরিশেষে যা বলতে চাই ডেভিড মার্টির এই সভা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এটি আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, রাজনীতি কেবল ক্ষমতার খেলা নয়, এটি মানুষকে একত্রিত করার এক শিল্প। সভা শেষে ফ্রান্সের জাতীয় সংগীত লা মার্সেইয়েজ গেয়ে সবাই দাঁড়িয়ে গেলেন।
সেই মুহূর্তে আমি অনুভব করলাম, প্রজাতন্ত্র মানে শুধু পতাকা নয়, এটি এক অদৃশ্য বন্ধন, যা মানুষকে একত্রে বেঁধে রাখে।
লু ক্রুসোর মেয়র ডেভিড মার্টি সেই বন্ধনেরই প্রতীক—একজন নেতা, যিনি মানুষের সঙ্গে, মানুষের জন্য এবং মানুষের ভেতর থেকেই নেতৃত্ব দেন।
*লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। ইমেইল: [email protected]
দুপুরে ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছি। দেখি আরেকটা ট্রাক থেকে ওয়াশিং মেশিন নামাচ্ছে। বিরাট গাবদা সাইজ। দুই/তিনতলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠাতে হবে। বেচারার গার্লফ্রেন্ড নেই পাশে। এবার দেখি ছেলেলা আমার দিকে তাকায়, ‘হাই’ দেয়।
ষাটের দশক শুধু জেইনের জীবন নয়, বদলে দিল এক পুরো প্রজন্মকে। মানুষ শিখল প্রশ্ন করতে, প্রতিবাদ করতে, আর ভালোবাসতে। সত্যিই, এক নতুন সময়ের জন্ম হয়েছিল।
ওমান রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ভালো ভূমিকা রাখতে পারে তবে দীর্ঘমেয়াদে ওমানে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় হবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণাতেও অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মজবুত করার জন্য রাজস্ব খাত ও আর্থিক খাতের সংস্কারকে সংহতভাবে এগিয়ে নিতে হবে। এটি শুধুমাত্র উন্নয়নের জন্য নয় বরং দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।